window.dataLayer = window.dataLayer || []; function gtag(){dataLayer.push(arguments);} gtag('js', new Date()); gtag('config', 'G-417KKLFS7B'); পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তরের নিয়ম ও খরচ জানুন 2025

পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করার নিয়ম : বিস্তারিত

BidyutSeva

Updated on:

পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করার নিয়ম : বিস্তারিত

আপনি কি পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করতে চান? তাহলে জেনে নিন আবেদন প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা।

ভূমিকা

আমরা সকলেই জানি,পল্লী বিদ্যুৎ হচ্ছে একটি সরকারি স্বায়ত্বশাসিত সেবামূলক বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান। যা বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশে মোট ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি রয়েছে যা বাংলাদেশের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সেবা প্রদান করে । বর্তমানে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে মোট প্রায় ০৩ কোটি ৬১ লক্ষ গ্রাহক বা মিটার রয়েছে।

বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হওয়ায় প্রায় প্রতি নিয়তই বিভিন্ন উনয়নমূলক কাজ হচ্ছে। যেমন অনেকেই পুরাতন ঘর ভেঙ্গে নতুন ঘর করছেন, অনেকই বহুতল ভবন নির্মান করছেন,অনেকই গ্রাম থেকে বাড়ি ঘর নিয়ে শহরে চলে যাচ্ছেন, অনেকেই আবার বিভিন্ন দোকান, শিল্প প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি স্থানান্তর করছেন।

ফলে এই বিশাল পরিমাণ গ্রাহকের অধিকাংশরই বিদ্যুতের মিটার যেখানে স্থাপিত আছে সেখান থেকে অন্য স্থানে নেওয়ার বা স্থাপন করার প্রয়োজন হয়ে পড়ছে।

কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত না জানার কারণে বিভিন্ন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অনেকই আবার দালাল ধরে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি অর্থ দিয়ে দিনের পর দিন ঘুরে ঘুরে তারপরও কাজটি সঠিক নিয়মে বৈধভাবে করতে পাড়ছেন না।

পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করার নিয়ম
পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করার নিয়ম

এজন্যই মূলত আজ আমরা সহজেই পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আশা করি আপনারা যদি নিচের দেওয়া পরামর্শ গুলো ফলো করে কাজ করেন তাহলে ৫-৭ দিনের মধ্যেই খুবই অল্প খরচে শুধুমাত্র অফিসের নির্ধারিত ফি দিয়েই আপনার মিটারটি বৈধভাবে স্থানান্তর করে নিতে পারবেন।

মিটার স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র

  • মিটারের সর্বোশেষ পরিশোধিত বিদ্যুৎ বিলের কপি
  • এক কপি রঙিন ছবি
  • একটি ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
  • ওয়ারিং রিপোর্ট (এটি কোথায় ও কীভাবে পাবেন নিচে তা বর্ণনা করা হয়েছে।

পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করতে হলে পল্লী বিদ্যুতের কিছু নির্ধারিত নিয়ম বা শর্তাবলি রয়েছে সেগুলো ফলো করতে হবে তাহলেই আপনি ৫-৭ দিনের মধ্যে মিটারটি স্থানান্তর করে নিতে পারবেন।

সেসব শর্তাবলি হচ্ছে প্রথমত আপনি আপনার মিটারটি স্থানান্তর করে যেখানে নিতে চাচ্ছেন সেখানে আগে পল্লী বিদ্যুৎ এর অনুমোদিত ভিলেজ ইলেকট্রিশিয়ান দ্বারা ওয়ারিং করতে হবে ।

তবে যেখানে মিটারটি নিতে চান সেই জায়গাটি অবশ্যই নিকটস্থ বিদ্যুৎ পোল থেকে ১৩০ ফুটের মধ্যে হতে হবে এবং ওয়ারিং করার পর সেই ইলেকট্রিশিয়ানের থেকে একটি ওয়ারিং রিপোর্ট অবশ্যই নিতে হবে।এরপর এটা বলার পর সেখান থেকে তারা একটি এক অবস্থানে সেবা বা ওয়ান পয়েন্ট ফর্ম পূরণ করে দিবে এবং আপনাকে অফিসের নির্ধারিত ৪১৪ টাকা ফি অফিসের ক্যাশ শাখায় জমা দিতে বলবে।

তখন আপনি এই ৪১৪ টাকা ফি জমা দিলে আপনার কাজ শেষ আপনি বাড়ি চলে আসবেন। তবে টাকা জমা দেওয়ার রশিদটি অবশ্যই সংরক্ষণ করে রাখবেন আর রশিদ ছাড়া কাউকে কোনো টাকা দিবেন না।এরপর ২-৩ দিনের মধ্যে আপনার ওয়ারিংটি সঠিকভাবে হয়েছে কি না তা তদন্ত করার জন্য একজন পল্লী বিদ্যুতের ওয়ারিং ইন্সপেক্টর আপনার সংযোগ স্থলে যাবে।

সব কিছু ঠিক থাকলে আপনার আবেদনটি অনুমোদন হয়ে আপনার মিটারটি স্থানান্তর করার জন্য একটি অর্ডার বের হবে যাকে CMO বলা হয়। এরপর সেই অর্ডারের প্রেক্ষিতে ২-৫ দিনের মধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লাইনম্যান গিয়ে আপনার বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করে দিয়ে আসবে।

এখন পুরো বিষয়টি সংক্ষেপে এবং ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হলোঃ

পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করার নিয়ম সংক্ষেপে এবং ধাপে ধাপে গাইড

  • প্রথমে যেই স্থানে মিটার নিতে চান সেখানে ওয়ারিং করতে হবে। ওয়ারিং এর স্থান অবশ্যই নিকটস্থ বিদ্যুৎ পোল থেকে ১৩০ ফুটের মধ্যে হতে হবে।
  • পল্লী বিদ্যুতের অনুমোদিত ইলেকট্রিশিয়ান কর্তৃক ওয়ারিং রিপোর্ট গ্রহণ করতে হবে। এবং নতুন জায়গায় মিটার স্থানান্তরের ফলে মিটারের সার্ভিস ড্রপ তার কম বা বেশি লাগলে তা অবশ্যই ওয়ারিং রিপোর্টে উল্লেখ করতে হবে।
  • সার্ভিস ড্রপ তার পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে ফ্রি দেওয়া হয়। তবে যদি অফিসে তার মজুদ না থাকে তাহলে গ্রাহক কর্তৃক বাজার থেকে সার্ভিস ড্রপ তার কেনার বিধান আছে তবে সেই তারের দাম পরে অফিস বিদ্যুৎ বিলের সাথে বিয়োগ করে দিবে। এজন্য সার্ভিস ড্রপ তার বাবদ কেউ টাকা চাইলে রশিদ ছাড়া টাকা দিবেন না।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যোগাড় করতে হবে (মিটারের সর্বোশেষ পরিশোধিত বিদ্যুৎ বিলের কপি,এক কপি রঙিন ছবি ও একটি ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি)।
  • এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ওয়ারিং রিপোর্ট নিয়ে আপনার সংশ্লিষ্ট পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যেতে হবে।
  • এরপর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এক অবস্থানে সেবা নামক ডেস্কে গিয়ে কথা বলে ফর্ম পূরণ করে ইস্টিমেট নিতে হবে।
  • এরপর এক অবস্থানে সেবা ফর্মের ইস্টিমেট অনুযায়ী ৪১৪ টাকা সমীক্ষা ফি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ক্যাশ শাখায় জমা দিতে হবে।
  • টাকা জমা দিয়ে অবশ্যই রশিদ সংগ্রহ করে রাখতে হবে এবং রসিদ ছাড়া কাউকে কোনো টাকা দেওয়া যাবে না।
  • এরপর ২-৩ দিনের মধ্যে অফিস থেকে গিয়ে ওয়ারিং তদন্ত করা হবে ( অনেক সময় তদন্ত হয় না ) এবং সব কিছু ঠিক থাকলে আবেদনটি অনুমোদন হবে।
  • আবেদন অনুমোদন হওয়ার পর বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তরের জন্য অফিস থেকে একটি অর্ডার বের হবে যার নাম CMO বা কাস্টমার মিটার অর্ডার।
  • এরপর ৩-৫ দিনের মধ্যে বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তরের জন্য অফিস থেকে লাইনম্যান পাঠানো হবে এবং লাইনম্যান গিয়ে মিটার সঠিকভাবে স্থানান্তর করে দিয়ে আসবে।
পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করার নিয়ম
পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করার নিয়ম

পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করতে বিদ্যুৎ অফিসে খুবই অল্প টাকা খরচ হয় তবে এর বাইরেও কিছু খরচ হয় নিচে তা ধাপে ধাপে আলোচনা করা হলোঃ

ওয়ারিং এর মালামাল

প্রথমত ওয়ারিং এর কোনো মালামালই অফিস থেকে দিবে না তাই প্রয়োজনীয় সকল মালামাল নিজেকে বাজার থেকে কিনতে হবে। তবে এক্ষেত্রে যদি পুরাতন ওয়ারিং এর মালামাল যেমন মেইন সুইচ তার ইত্যাদি ভালো থাকে তাহলে অল্প খরচ হবে। সেক্ষেত্রে শুধু একটি মিটার বোর্ড (৭০ টাকা) ও একটি আর্থিং রড (৫৩০ টাকা তবে এর থেকে কম ও বেশি দামেও বাজারে পাওয়া যায়) টাকা কিনতে হবে ।

অর্থাৎ তখন এক্ষেত্রে ৬০০ টাকা খরচ হয় । তবে যদি মেইসুইচ ও টিসি তার সহ অন্যান্য মালামাল ভালো না থাকে, তাহলে এসব মিলিয়ে সকল মালামাল নতুন কিনতে প্রায় ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা লাগতে পারে । এটি অবশ্য বাজার মূল্য এবং মালামালের গুনগত মানের উপর নির্ভার করে।

ইলেকট্রিশিয়ানের মুজুরী

ওয়ারিং এর মালামাল কেনার পর ওয়ারিং করতে হয় তাই ওয়ারিং করতে ইলেকট্রিশিয়ানের প্রয়োজন হয় । সাধারণত পল্লী বিদ্যুৎ এর অনুমোদিত একজন ইলেকট্রিশিয়ান একটি ওয়ারিং করতে ও তার রিপোর্ট প্রদান করতে ইলেকট্রিশিয়ানের মুজুরী বাবদ ৩০০-৫০০ টাকা নিয়ে থাকেন।

অফিসে টাকা জমা

পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর বাবদ সমীক্ষা ফি বর্তমানে চারশত চোদ্দ ( ৪১৪) টাকা নির্ধারিত এর বেশি এক টাকা ও লাগে না। অবশ্য এই ফি ইতিপূর্বে মাত্র তিনশত পঁয়তাল্লিশ টাকা ছিলো। তবে পল্লী বিদ্যুৎ অবশ্যই এই ৪১৪ টাকার একটি রশিদ দিবে । তাই এটি সংরক্ষণ করে রাখবেন এবং মনে রাখাবেন দালাল হতে সাবধান তাই রশিদ ছাড়া কাঊকে কোনো টাকা দিবেন না।

মূলত এগুলোই খরচ এছাড়া আর কোনো খরচ নাই। আর বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করতে বা করার পর লাইনম্যানকে কোনো টাকা দিতে হয় না।

অর্থাৎ আমরা যদি খরচের বিষয়টি সামারী করি তাহলে পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করতে প্রায় সর্বনিম্ন ১৫০০ টাকা থেকে সর্বচ্চো ২২০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে

আরো পড়ুনঃ বিদ্যুতের সিস্টেম লস কি ও কত প্রকার? কারণসহ ব্যাখ্যা

পল্লী বিদ্যুতের মিটার অফিসে আবেদন না করে নিজে নিজে স্থানান্তর করলে কি হয়?

অনেকেই প্রশ্ন করেন পল্লী বিদ্যুতের মিটার অফিসে আবেদন না করে নিজে নিজে স্থানান্তর করলে কি হয়? আবার অনেক সময় অনেকে আছে অফিসে যাবার ভয়ে নিজে নিজে অথবা গ্রাম্য ইলেক্ট্রিশিয়ানকে টাকা দিয়ে অবৈধভাবে মিটার স্থানান্তর করে অন্য জায়গায় বা অন্য স্থানে স্থাপন করে নেয় তাহলে সেক্ষেত্রে তাদের কি হয়?

পল্লী বিদ্যুতের মিটার অফিসে আবেদন না করে নিজে নিজে স্থানান্তর করা একটি গুরুতর অপরাধ এবং তা বিদ্যুৎ চুরির সামিল । বিদ্যুৎ এর মিটারে সাধারণ গ্রাহকের হাত দেওয়া বা সম্পূর্ণ নিষেধ।

কেউ যদি এই অপরাধ করে থাকে এবং পল্লী বিদ্যুৎ অফিস তা বুঝতে পারে তাহলে প্রথমে তার নামে একটি রিপোর্ট হবে এরপর ওই মিটারটি অফিস থেকে রিমুভ বা খুলে আনার জন্য অর্ডার হবে। এবং অফিস থেকে লাইনম্যান পাঠিয়ে তা খুলে আনা হবে এবং পর্বর্তীতে তাকে জরিমানা করা হয় এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ আর করবে না বলে অঙ্গীকারনামা দিতে হয়। তাই সবাইকে এই কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি।

আশা করি আজকের পর পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের আর কোনো প্রশ্ন থাকবে না । তবুও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করবেন। আর এই ব্লগটি আপনার কোনো উপকারে আসলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না।

বিদ্যুৎ সম্পর্কে বিস্তারিত আরো কিছু জানতে নিয়মিত ফলো করুন আমাদের পল্লী বিদ্যুৎ সেবা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট , ইউটিউব চ্যানেল

পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করতে কত টাকা খরচ হয় Electricity Crisis

ELECTRICTY CRISIS এবং ফেসবুক পেইজ Electricity Crisis

2 thoughts on “পল্লী বিদ্যুতের মিটার স্থানান্তর করার নিয়ম : বিস্তারিত”

Leave a Comment