বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচুর পরিমানে নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা দোকান তৈরী হচ্ছে এজন্য অনেকেরই বিদ্যুতের নতুন বানিজ্যিক মিটার নেওয়ার প্রয়োজন। অর্থাৎ আপনি যেহেতু এই পোস্টে ক্লিক করেছেন তার মানে আপনারও হয়তো বিদ্যুতের একটি নতুন বানিজ্যিক মিটার নেওয়া প্রয়োজন।
তাই আজ আমরা আলোচনা করবো ২০২৫ সালে পল্লী বিদ্যুৎ থেকে নতুন বানিজ্যিক মিটার নিতে কত টাকা খরচ হয় ও কি কি কাগজপত্র লাগে ? এজন্য সঠিক নিয়ম জানতে এবং হয়রানি এড়াতে পুরো লিখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এখনই।
ভূমিকা
পল্লী বিদ্যুৎ সধারণত অনেক গুলো ক্যাটাগরিতে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে যেমনঃ আবাসিক ( এলটি-এ), বানিজ্যিক (এলটি-ই), শিক্ষা ও দাতব্য ( এলটি-ডি১), সেচ (এলটি-বি) এবং ক্ষুদ্র শিল্প (এলটি-সি১), রাস্তার বাতি, চার্জিং স্টেশন, মৎস্য এবং অস্থায়ী ইত্যাদি।

এ সকল ক্যাটাগরিতে মিটার নিতে হলে আলাদা আলাদা ক্যাটাগরির জন্য আলাদা আলাদা কাগজপত্র এবং ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণ খরচ হয়। আমরা ধারাবাহিকভাবে আপনাদের সকল ক্যাটাগরির খরচ ও কাগজপত্র সম্পর্কে জানাবো। সেই ধারাবাহিকতায় আজ পল্লী বিদ্যুতের বানিজ্যিক নতুন মিটার নিতে কত টাকা ও কি কি লাগে তা নিয়ে আলোচনা করবো।
পল্লী বিদ্যুৎ থেকে নতুন বানিজ্যিক মিটারের সংযোগ গ্রহণের জন্য কিছু নির্দিষ্ট ফি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয় । নিচে সম্পূর্ণ তথ্যসহ আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা হলোঃ
নতুন বানিজ্যিক মিটার নিতে কত টাকা খরচ হয় ও কি কি কাগজপত্র লাগে
প্রত্যেকেরই একটিই প্রশ্ন যে, পল্লী বিদ্যুতের নতুন বানিজ্যিক মিটার নিতে কত টাকা ও কি কি কাগজপত্র লাগে ? আবেদন প্রক্রিয়া জানার আগে বা শুরু করার আগে অবশ্য এই দুই বিষয়ে প্রথমেই জানা প্রয়োজন। তাই নিচে পল্লী বিদ্যুতের নতুন বানিজ্যিক মিটার নিতে কত টাকা খরচ হয় এবং কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তা এখন নিচে আলোচনা করবো।
এক নজরে লেখাটি পড়ুন
নতুন বানিজ্যিক বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ২০২৫
নতুন বানিজ্যিক বা দোকানে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করতে হলে সর্বপ্রথম কিছু কাগজপত্র গুছিয়ে নিতে হবে কারণ এইগুলো আবেদনের সময় লাগবে। নিচে কী কী কাগজপত্র লাগবে তা দেওয়া হলো এগুলো দেখে ঝটপট কাগজপত্রগুলো রেডি করে নিন!
- আবেদনকারীর এক কপি রঙ্গিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- আবেদনকারীর ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
- জমির মালিকানার দলিল বা পর্চার ফটোকপি অথবা মূল মালিক না থাকলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ডিড ডকুমেন্টের ফটোকপি।
- ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা দোকানের ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি।
- পূর্বে নিজের কোনো মিটার থাকলে সেই মিটারের একটি পরিশোধিত বিদ্যুৎ বিলের কাগজ, অথবা পার্শ্ববর্তী একটি বাণিজ্যিক মিটারের বিলের কাগজ।
উপরে দেওয়া কাগজপত্রগুলোর পাশাপাশি আরো একটি কাগজ বা ডকুমেন্ট অবশ্যই লাগবে। আর তা হলোঃ আপনার সংযোগ স্থল বা দোকানে মিটার স্থাপনের জন্য ওয়ারিং করার পর সেই ওয়ারিং এর একটি রিপোর্ট যা পল্লী বিদ্যুৎ এর নির্ধারিত বা অনুমোদিত লাইসেন্স প্রাপ্ত ইলেকট্রিশিয়ানের থেকে আপনাকে গ্রহণ করতে হবে।
- ওয়ারিং রিপোর্ট।
অর্থাৎ সহজভাবে বললে যা লাগবে তা হলোঃ- এক কপি রঙ্গিন ছবি, ভোটার আইডি কার্ড এর ফটোকপি, জমির মালিকানার দলিল বা পর্চার ফটোকপি অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ডিড ডকুমেন্টের ফটোকপি এবং একটি ওয়ারিং রিপোর্ট।

নতুন বানিজ্যিক বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় খরচের পরিমাণ ২০২৫
পল্লী বিদ্যুৎ এর নতুন বানিজ্যিক বা দোকানে বিদ্যুৎ সংযোগের নেওয়ার জন্য অফিসিয়াল ফি সারা বাংলাদেশে একই নির্ধারিত। তবে ওয়ারিং এর মালামাল এবং ইলেকট্রিশিয়ানের মুজুরীর কারণে মোট খরচ জায়গা ভেদে কম বেশি হতে পারে। নিচে একটি বানিজ্যিক বা দোকানে মিটার নিতে কত টাকা খরচ হয় তা একটি সাধারণ হিসাবের মাধ্যমে দেওয়া হলোঃ-
- অনলাইনে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন ফি ১৩৮ টকা ভ্যাটসহ ( অফিসিয়াল নির্ধারিত)।
- প্রতি কিলোওয়াট চুক্তিবদ্ধ লোডের বিপরীতে জামানত ৯৬০ টকা ভ্যাটসহ ( অফিসিয়াল নির্ধারিত)।
- সদস্য ফি ৫০ টাকা ( অফিসিয়াল নির্ধারিত)।
- ওয়ারিং এর মালামাল বাবদ ১২০০-১৫০০ টাকা লাগে। তবে স্থান এবং বাজার দর অনুযায়ী এটি পরিবর্তন হতে পারে।
- ওয়ারিং করণ ও রিপোর্ট গ্রহণ সহ ইলেকট্রিশিয়ানের মুজুরী ৬০০-৮০০ টাকা।
এখন সব কিছু একসাথে যোগ করলে দেখা যায়, পল্লী বিদ্যুৎ এর নতুন একটি বানিজ্যিক বা দোকানে মিটার নিতে মোট ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা খরচ হয়। এখানে আরো একটি বিষয় জানা অত্যন্ত জরূরী সেটা হচ্ছে, সারা বাংলাদেশের পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে মিটারে সংযোগ দেওয়ার সার্ভিস ড্রপ বা ডি-১১ তার পর্যাপ্ত মজুদ না থাকায় বর্তমানে নিজের টাকায় বাজার থেকে সার্ভিস ড্রপ বা ডি-১১ তার কিনে সংযোগ নিতে হচ্ছে। এজন্য অতিরিক্ত আরো কিছু টাকা ব্যয় হবে।
তবে সার্ভিস ড্রপ বা ডি-১১ তার পল্লী বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃক ফ্রি সরবারাহ করার বিধান থাকায়, নিজের টাকায় বাজার থেকে সার্ভিস ড্রপ বা ডি-১১ তার কেনার রশিদটি অফিসে জমা দিলে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃক ৪০.০৮৫ টাকা বা প্রায় ৪১ টাকা প্রতি মিটার দরে তা গ্রাহককে বিদ্যুৎ বিলের সাথে সমন্বয় করে দিবে বা ফেরত দিয়ে দিবে। কিন্তু এখানে অফিসের দেওয়া মূল্য থেকে বাজার মূল্য কিছুটা বেশি হয়ে থাকে।
আবেদন থেকে শুরু করে সংযোগ পাওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত কার্যক্রম
বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহণের জন্য সর্বপ্রথমে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন থেকে শুরু করে সংযোগ পাওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত কার্যক্রম সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। অন্যথায় বিভিন্ন ধরনের হয়রানি শিকার হওয়া লাগতে পারে। তাই নিচে ধাপে ধাপে আবেদনের শুরু থেকে সংযোগ পাওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ-
- সর্বোপ্রথমে উপরে দেওয়া কাগজপত্র ও ডুকুমেন্ট সংগ্রহ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় অর্থ যোগাড় করে রাখতে হবে।
- এরপর সংযোগকৃত স্থলে ওয়ারিং সম্পন্ন করতে হবে এবং ইলেকট্রিশিয়ানের থেকে ওয়ারিং রিপোর্ট গ্রহণ করে তা সংরক্ষন করতে হবে।
- সংযোগ স্থল নির্বাচন বা ওয়ারিং করার পূর্বে একটি বিষয় অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে যে, পার্শ্ববর্তী বিদ্যুৎ লাইনের পোল থেকে সংযোগ স্থলের দূরত্ব যেন ১৩০ ফুটের মধ্যে থাকে।
- এরপর সংশ্লিষ্ট ডুকুমেন্ট সহ অনলাইনে পল্লী বিদ্যুতের ওয়েব সাইটে গিয়ে অনলাইনে বানিজ্যিক ক্যাটাগরিতে মিটারের জন্য আবেদন করতে হবে। এবং ডকুমেন্টগুলো অফিসে জমা প্রদান করে দিয়ে আসতে হবে।
- আবেদনের সময় আবেদন ফি বাবদ নির্ধারিত ফি ১৩৮ টাকা মোবাইল ব্যাংকিং রকেট এর মাধ্যমে জমা দিতে হবে এবং আবেদন শেষ আবেদনের কপি সংগ্রহ ও টাকা জমা দেওয়ার মেসেজ সংরক্ষন করে রাখতে হবে।
- এরপর দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে গিয়ে আপনার আবেদনকৃত সংযোগ স্থল তদন্ত করতে যাবে ।
- সবকিছু ঠিক থাকলে আপনার চুক্তিবদ্ধ লোড অনুযায়ী জামানত এবং সদস্য ফি ৫০ টাকা জমা দেওয়ার জন্য একটি মেসেজ আপনাকে দেওয়া হবে।
- এরপর আপনি পুনঃরায় মোবাইল ব্যাংকিং রকেট এর মাধ্যমে জামানতের টাকা জমা দিতে পারবেন। এবং টাকা জমা দিয়ে মেসেজ সংরক্ষন করে রাখবেন।
- এরপর অফিস থেকে আপনার সংযোগ প্রদানের জন্য একটি অর্ডার বা CMO বের হবে এবং তাতে আপনার জন্য মিটার ইস্যু হবে।
- তারপর আপনাকে বাজার থেকে সার্ভিস ড্রপ বা ডি-১১ তার ক্রয় করে রশিদ জমা দিতে বলবে। অফিসে পর্যাপ্ত তার থাকলে তার কিনতে বলবে না।
- আপনি সার্ভিস ড্রপ বা ডি-১১ তার বাজার থেকে ক্রয় করে রশিদ জমা দিলে অফিস থেকে লাইনম্যান গিয়ে আপনার বাড়িতে বা সংযোগ স্থলে গিয়ে মিটারটি লাগিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে আসবে। এক্ষেত্রে লাইনম্যান বা অন্য কাউকে আপনার কোনো টাকা বা বকশিশ দিতে হবে না।
- ব্যাস শেষ!
এটাই হচ্ছে পল্লী বিদ্যুতের নতুন বানিজ্যিক বা দোকানে মিটার নেওয়ার প্রক্রিয়া। আশা করি বুজতে পেরেছেন। আর বুজতে না পারলে আরো একবার পড়ুন তাহলে পুরো বিষয়টি আপনার জন্য পানির মতো সহজ হয়ে যাবে। এরপরও না বুঝতে পারলে বা বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে দেরি হলে সরাসরি আপনার নিকটস্থ বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলুন অথবা তাদের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করুন।
আর একটা বিষয় কখনো কোনো দিনও দালালের কাছে যাবেন না। এবং অবৈধভাবে কাউকে টাকা দিয়ে মিটার নেওয়ার চেষ্টা করবেন না ও অবৈধভাবে চুরি করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন না। মনে রাখবেন বিদ্যুৎ একটি জাতীয় সম্পদ। এছাড়াও আপানার আশেপাশে কোথাও বিদ্যুৎ চুরি বা কোনো কারনে আপনার কাছে বিদ্যুৎ অফিসের কেউ ঘুষ দাবি করলে সরাসরি উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কথা বলুন অথবা ফোন করুন ১৬৮৯৯ পল্লী বিদ্যুতের হটলাইন নম্বরে।

দোকানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া বিষয়ে কিছু প্রশ্নউত্তর (FAQ)
১. নতুন দোকানে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে কি কি কাগজপত্র লাগে ?
- আবেদনকারীর এক কপি রঙ্গিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- আবেদনকারীর ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
- জমির মালিকানার দলিল বা পর্চার ফটোকপি অথবা মূল মালিক না থাকলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ডিড ডকুমেন্টের ফটোকপি।
- ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা দোকানের ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি।
- পূর্বে নিজের কোনো মিটার থাকলে সেই মিটারের একটি পরিশোধিত বিদ্যুৎ বিলের কাগজ, অথবা পার্শ্ববর্তী একটি বাণিজ্যিক মিটারের বিলের কাগজ।
২. নতুন দোকানে বানিজ্যিক মিটার নিতে কত টাকা খরচ হয়?
পল্লী বিদ্যুৎ এর নতুন একটি বানিজ্যিক বা দোকানে মিটার নিতে মোট ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা খরচ হয়।
এখানে আরো একটি বিষয় জানা অত্যন্ত জরূরী সেটা হচ্ছে, সারা বাংলাদেশের পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে মিটারে সংযোগ দেওয়ার সার্ভিস ড্রপ বা ডি-১১ তার পর্যাপ্ত মজুদ না থাকায় বর্তমানে নিজের টাকায় বাজার থেকে সার্ভিস ড্রপ বা ডি-১১ তার কিনে সংযোগ নিতে হচ্ছে। এজন্য অতিরিক্ত আরো কিছু টাকা ব্যয় হবে।
৩. পল্লী বিদ্যুৎ অফিস বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে কি কি ফ্রি দেয়?
নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে পল্লী বিদ্যুৎ ক্যাটাগরি অনুযয়ী অনেক কিছু ফ্রি দিয়ে থাকে, তবে বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী পল্লী বিদ্যুৎ বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে মিটার, প্রয়োজনীয় সার্ভিস ড্রপ তার, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ০২ টি খুটি বা ০২স্প্যান নতুন লাইন নির্মাণ এবং সর্বোচ্চ ৮০ কিলোওয়াত লোড পর্যন্ত ট্রান্সফরমার ফ্রি দিচ্ছে।
৪. নতুন মিটার লাগানোর শেষে লাইনম্যানকে কত টাকা বকশিশ দিতে হয়?
বিদ্যুতের নতুন মিটার সংযোগ স্থলে লাগানোর পর, মিটারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া ব্যাক্তিকে কোনো টাকা বা বকশিশ দিতে হয় না এবং দেওয়া যাবে না। কারণ লাইনম্যান পল্লী বিদ্যুতের বেতনভুক্ত কর্মচারী এজন্য তাদেরকে অতিরিক্ত কোনো টাকা দেওয়া যাবে না।
৫. বাজারে সার্ভিস ড্রপ তারের মূল্য কত টকা?
বাজারে সার্ভিস ড্রপ বা ডি-১১ তারের মুল্য ২০ টাকা ফুট তবে এটি দোকান, স্থান ও ব্যক্তিভেদে কম বা বেশি হতে পারে।
৬. পল্লী বিদ্যুৎ কি দরে সার্ভিস ড্রপ বা ডি-১১ তারের দামে এবং কীভাবে ফেরত দিবে?
সার্ভিস ড্রপ বা ডি-১১ তার পল্লী বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃক ফ্রি সরবারাহ করার বিধান থাকায়, নিজের টাকায় বাজার থেকে সার্ভিস ড্রপ বা ডি-১১ তার কেনার রশিদটি অফিসে জমা দিলে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃক ৪০.০৮৫ টাকা বা প্রায় ৪১ টাকা প্রতি মিটার দরে তা গ্রাহককে বিদ্যুৎ বিলের সাথে সমন্বয় করে দিবে বা ফেরত দিয়ে দিবে। কিন্তু এখানে অফিসের দেওয়া মূল্য থেকে বাজার মূল্য কিছুটা বেশি হয়ে থাকে।
৭. পল্লী বিদ্যুতের নতুন মিটারের ওয়ারিং এর সময় মিটার বোর্ড কত উপরে স্থাপন করতে হয়?
পল্লী বিদ্যুতের নতুন মিটারের ওয়ারিং এর সময় মিটার বোর্ড স্থাপনের নির্দিষ্ট কোনো উচ্চতা নাই তবে, নিয়মে বলা আছে, একজন মানুষের আই লেভেলে মিটার বোর্ড স্থাপন করতে হবে। যেটা মাটি থেকে সর্বোচ্চ ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি ধরা যেতে পারে।
এটা অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ হচ্ছে মিটার বোর্ড বেশি উপরে স্থাপন করা হলে বিভিন্ন সময়ে মিটারের কাজ করতে লাইনম্যান সহ অন্যদের যেমন কষ্ট হবে তেমনি মিটার রিডার এর সঠিকভাবে মিটারের রিডিং গ্রহনে বাধাগ্রস্থ হবে ফলে বিদ্যুৎ বিলে সমস্যা হবে তাই মিটার বোর্ড ও মিটার সর্বোক্ষণ আই লেভেল বা চোখের সমান উচ্চতায় লাগানো উচিত।
উপসংহার
বাংলাদেশে নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা দোকানের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ থেকে বাণিজ্যিক মিটার সংযোগ নেওয়ার প্রক্রিয়া এখন অনেক সহজ হয়েছে। নির্ধারিত কাগজপত্র ও ফি প্রদান করে স্বচ্ছ উপায়ে সংযোগ গ্রহণ করা সম্ভব। তবে অনেক সময় গ্রাহকরা দালালের খপ্পরে পড়ে অতিরিক্ত খরচের সম্মুখীন হন। তাই নিজেই প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করে আবেদন করা উত্তম।
সরকারি নির্দেশিকা ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আপডেটেড নীতিমালা অনুসারে খরচ ও প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। তাই আবেদন করার আগে সংশ্লিষ্ট পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করে সর্বশেষ তথ্য জেনে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। সঠিক নিয়ম মেনে আবেদন করলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সংযোগ পাওয়া সম্ভব এবং ব্যবসা নির্বিঘ্নে পরিচালনা করা যাবে।