বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা : কারণ, প্রতিকার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

BidyutSeva

Updated on:

বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা : কারণ ও প্রতিকার
"বাংলাদেশে বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে? কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়? বিদ্যুৎ কর্মী ও সাধারণ জনগণের করণীয় কী? বিস্তারিত জানুন এই পোস্টে।" - BidyutSeva.com

ভূমিকা

বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির অন্যতম চালিকা শক্তি হলো বিদ্যুৎ। প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ, শিল্প-কারখানা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। আর এই গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বিদ্যুৎ কর্মীরা, বিশেষ করে লাইনম্যান ও প্রযুক্তিগত কর্মীরা। ঝড়-বৃষ্টি কিংবা বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেও তারা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করেন।

তবে দুঃখজনক বিষয় হলো, এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করতে গিয়ে তারা প্রায়ই মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হন, যা অনেক ক্ষেত্রে তাদের মৃত্যু বা স্থায়ী পঙ্গুত্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সম্প্রতি বেশ কয়েক বছর ধরে লক্ষ করা যাচ্ছে,বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনা দিন দিন ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে । যার বেশিরভাগ দুর্ঘটনাই ঘটছে দেশের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে। এবং মূলত এই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে মাঠ পর্যায়ে বা বৈদ্যুতিক লাইনে কর্মরত কর্মচারী লাইনম্যানেরা।

বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা : কারণ, প্রতিকার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা: কারণ, প্রতিকার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান

একটি পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে যে গত ১২ বছরে পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ১৫০জন লাইনম্যানের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় ১০০০ জনেরও বেশি লাইনম্যান আহত হয়েছে যাদের বেশির ভাগেরই হাত অথবা পা অথবা উভয়ই কেটে ফেলে দিতে হয়েছে অর্থাৎ তারা স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্য বরণ করেছেন। অর্থাৎ বছরে এভারেজ শুধু পল্লী বিদ্যুতেই প্রায় ৩০-৪০ জন লাইনম্যান বা বিদ্যুৎ কর্মী দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

শুধু পল্লী বিদ্যুতেই নয় দেশের আরো অন্যান্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণকারী সংস্থা যেমনঃ পিডিবি, ডেসা, ডেসকো, নেসকো, ওজোপাডিকো, পিজিসিবি, পাওয়ারসেল ইত্যাদি সহ দেশে থাকা হাজার হাজার দক্ষ ও অদক্ষ ইলেক্ট্রিশিয়ান ও বিভিন্ন বৈদ্যুতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুতকর্মীরা ও প্রায়ই এই বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

এজন্য আজ আমরা বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার গুলো নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করি পুরো লেখাটি পরবেন এবং বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা রোধে নিজে সচেতন হবেন এবং অন্যকেও সচেতন করবেন।

কেন এই বিষয়টি নিয়ে সচেতন হওয়া জরুরি?

বিদ্যুৎ কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শুধুমাত্র তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয় নয়, বরং এটি জাতীয় উন্নয়নের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি বিদ্যুৎ কর্মীদের জীবন ঝুঁকিতে থাকে এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে সারা দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাই হুমকির মুখে পড়তে পারে।

প্রধান কারণগুলো:
* বিদ্যুৎ কর্মীদের সচেতনতা ও নিরাপত্তার ঘাটতি।
* বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোর পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ব্যর্থতা।
* সঠিক প্রশিক্ষণ ও আধুনিক সরঞ্জামের অভাব।
* সাধারণ জনগণের অসচেতনতা ও অবহেলা।

এজন্য বিদ্যুৎ কর্মীদের সচেতন করা, নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং সাধারণ জনগণকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করাই একান্ত জরুরি।

এই লেখায় আমরা বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার কারণ, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো, যা বিদ্যুৎ খাতের কর্মী ও সাধারণ জনগণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার কারণসমূহ

নিরাপত্তার বিধি বিধান যথাযথভাবে অনুসরন পূর্বক অধিক ‍সতর্কতার সাথে কাজ করলে দূর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার কারণ গুলো হলোঃ

  1. অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও অবহেলা
  2. ভুল-সাটডাউন
  3. প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন না করা
  4. অতিরিক্ত কাজের চাপ
  5. একাধিক বা ডুয়েল সোর্স
  6. অস্থায়ী গ্রাউন্ডিং না করা
  7. বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ না করে কাজ করা
  8. মানসিক চাপ
  9. শারীরিক অসুস্থতা
  10. ঘন ঘন বদলি
  11. যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাব
  12. পর্যাপ্ত নিরাপত্তা মিটি বা কারিগরী সেমিনারের অভাব
  13. যোগাযোগের অভাব বা সম্বনয়হীনতা
  14. কারিগরি ত্রুটি
  15. বিদ্যুৎ কর্মীর অজ্ঞতা
  16. নিম্নমানের মালামাল বা সরঞ্জাম
  17. উর্ধবতন কতৃপক্ষের তদারকির অভাব বা অদক্ষতা
  18. অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার
  19. বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনার বিষয়ে অজ্ঞতা অসাবধানতা উদাসীনতা ও সমন্বয়হীনতা।
  20. প্রাকৃতিক দুর্যোগ
  21. পুরাতন বা জরাজীর্ণ লাইন, যথাযথ ভাবে লাইন পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণ না করা।
  22. নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি না করে কাজ আরম্ভ করা
  23. লাইন সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান না থাকা।
  24. অযাচিত ডিস ও ইন্টারনেটের লাইন ও ডিভাইস

উপরের কারণগুলো সম্পর্কে নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলোঃ

১. অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও অবহেলাঃ বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত আত্মবিশাস  যেমনঃ বিদ্যুৎ এর কাজের সময় শর্টকাট পদ্ধতি অবলম্বন করে কাজ করা।

” আমিই সব কাজ জানি বা পারি ,আমার কিছুই হবে না, এই কাজ আগে অনেক করেছি, তাড়াতাড়ি কাজ করতে হবে,আমার সাথে দুর্ঘটনা ঘটে না, কোনো নিরাপত্তা নেওয়া লাগবে না দুই মিনিটের কাজ, লাইন বন্ধ করতে হবে না আমি তো লাইনে হাত দিবো না প্লায়ার দিয়ে কাজ করবো ইত্যাদি। ” এইসব মনোভাব প্রকাশই হচ্ছে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও নিরাপত্তার বিষয়ে অবহেলা করা । যার কারণে বিদ্যুৎ কর্মীরা বেশি দুর্ঘটনার শিকার হন।

২. ভুল-সাটডাউনঃ ভূল-সাটডাউন এর কারনে বেশির ভাগ সময়ই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। যেমনঃ এক লাইনে কাজ করতে গিয়ে অন্য লাইন সাটডাউন নেওয়া বা অন্য লাইন বন্ধ করা । এছাড়াও উপকেন্দ্র থেকে সাটডাউন নিলে উপকেন্দ্রে ডিউটিরত ব্যাক্তি ভুলে এক ফিডারে

লাইনে কাজ করার পূর্বে সাটডাউন নেওয়া হয়। তবে উপকেন্দ্র থেকে ভুল সাটডাউন দেওয়ায় বা ভুল লাইন বন্ধ করার কারণে একজন বিদ্যুতায়িত হয় এরপর বিদ্যুতায়িত ব্যাক্তিকে বাঁচাতে গিয়ে অন্য জন ও বিদ্যুতায়িত হয় এবং মারা যায়।

৩. প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন না করাঃ মূলত প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন না  করাই হচ্ছে বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ।

যথাযথ ইউনিফর্ম (যেমন নির্ধারিত পোশাক পরিধান না করা,বুট পায়ে না দেওয়া, মাথায় সেফটি ক্যাপ না নেওয়া, হ্যান্ড গ্লবোস না পরা,চোখে চশমা না পড়া ইত্যাদি) না পড়া, অস্থায়ী গ্রাউন্ডিং না করা ইত্যাদি নিরাপত্তা বিধি না মানলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ।  সাধারণত বলা হয়ে থাকে যে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করে কাজ করলে  বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা সম্ভব।

৪. অতিরিক্ত কাজের চাপঃ বেশির সময়ই পল্লী বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃক লাইনম্যানদের অতিরিক্ত কাজের প্রেশার দেওয়া হয় ।যেমন একজন পল্লী বিদ্যুৎ এর একজন লাইনম্যান সারাদিনে ৮ থেকে ১০ টি কাজ করতে পারলেও তাকে প্রতিদিন অফিস থেকে বের হওয়ার সময় ২০ থেকে ২৫ টা কাজ ধরিয়ে দেওয়া হয়।

ফলে সে অতিরিক্ত কাজের চাপে থাকে এবং এজন্য সে অতি দ্রুত কাজ সমাধান বা শেষ করতে চায় ও সময় স্বল্পতার জন্য কাজ করার সময় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে পারে না। যার ফলে বিদ্যুৎ এর কাজ করার সময় অতিরিক্ত তাড়াতাড়ি ও নিরাপত্তা না নেওয়া সে দুর্ঘটনার শিকার হয়।যার কারণে দেশের অন্যান্য বিদ্যুৎ সংস্থার তুলনায় পল্লী বিদ্যুৎ এর দুর্ঘটনার হার বেশি।

৫. একাধিক বা ডুয়েল সোর্সঃ বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার অন্যতম আরো একটি কারণ হচ্ছে একাধিক বা ডুয়েল সোর্স। অর্থাৎ যেই স্থানে বা পোলে কাজ হবে, সেখানে দুই দিক থেকে লাইন এসে ডেড বা শেষ হয়েছে এবং সেখানে দুইদিক থেকেই সোর্স আছে।

এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার কারণ হচ্ছে, তারা বেশির ভাগ সময়ই একটা কমন ভুল করে যে কাজ করতে এসে তাড়াহুড়ায় ডুয়েল সোর্স দেখতে বা বুঝতে পারে না।ফলে একই সোর্স মনে করে একটি সোর্সের লাইন বন্ধ করে কাজ শুরু করে কিন্তু সেখানে অন্য দিক থেকে সোর্স থাকায় তারা দূর্ঘটনার শিকার হন।

উদাহরণস্বরূপঃ গত ১১ মার্চ ২০২১ খ্রিঃ তারিখে কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মিরপুর জোনাল অফিসে  একই পোলে একাধিক বা ডুয়েল সোর্স  থাকার কারনে রিমুভ সিএমও এর কাজ করতে গিয়ে মোঃ ডিলু মিয়া নামে একজন লাইন ক্র লেভেল-১ দূর্ঘটনার শিকার হন। এবং তিনিও স্পটেই মৃত্যু বরন করেন।নিচে এই দুর্ঘটনার ভিডিও দেওয়া হলো দেখে নিন।

৬. অস্থায়ী গ্রাউন্ডিং না করাঃ বিদ্যুৎ লাইনে কাজ করার পূর্বে এবং সাটডাউন নেওয়ার পর বা লাইন বন্ধ করার পর লাইনটি বন্ধ হয়েছে কি না তা চেক করা এবং বন্ধ লাইনে যদি হঠাৎ কোনো সোর্স থেকে বিদ্যুৎ চলে আসে তাহলে তা থেকে বাচার জন্য সর্বত্তম উপায় হচ্ছে  যেখানে বা যেই পোলে বিদ্যুৎ কর্মী কাজ করবে তার সোর্স সাইড এবং লোড সাইড উভয় দিকেই অস্থায়ী গ্রাউন্ডিং করা ।

এর ফলে ভুল সাটডাউন জনিত দুর্ঘটনার এর হাত থেকে  রক্ষা পাওয়া যায়। তবে অধিকাংশ বিদ্যুৎ কর্মী অবহেলা করে এই অস্থায়ী গ্রাউন্ডিং করনে না যার ফলে তারা বেশির ভাগ সময়ই মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হন।

সাধারণত বলা হয়ে থাকে নিয়ম মেনে অস্থায়ী গ্রাউন্ডিং করে কাজ করলে ভুল সাটডাউন জনিত দুর্ঘটনা শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা সম্ভব।  উপরে দেওয়া দুইটি দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে একটিতেও এই অস্থায়ী গ্রাউন্ডিং করা হয় নাই যার ফলে তারা মারাত্মকভাবে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন যার কারনে তাদের জীবন বিপন্ন হয়েছে।

৭. বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ না করে কাজ করাঃ অনেক সময় বিদ্যুৎ কর্মীরা বিদ্যুৎ চালু অস্থায়ই বিদ্যুৎ লাইনে কাজ করে থাকেন ফলে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ না করেই কাজ করার কারণে বিদ্যুৎ কর্মীদের সাথে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ঘটে।

৮. মানসিক চাপঃ মানসিক চাপের কারণেও দূর্ঘটনা ঘটে যেমন পারিবারিক বা ব্যাক্তিগত কোনো কারনে যদি কেউ বেশি টেনশনে থাকে বা অফিসের কোনো অফিসার যদি কোনো খারপ আচরণ বা নির্যাতন করে তখন সেই ব্যাক্তি নানা ধরনের চিন্তায় বা টেনশনে মগ্ন থাকে আর এই অবস্থায় বিদ্যুৎ এর লাইনে কাজ করতে গেলে নিরাপত্তা জনিত বিভিন্ন ধরনের ভুল হয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

৯. শারীরিক অসুস্থতাঃ শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে বিদ্যুৎ পোলে আরোহণ বা বিদ্যুৎ এর যেকোনো কাজ করা উচিত না এর ফলে বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এবং নিজের অসুস্থতা আরো বেড়ে যেতে পারে।

১০. ঘন ঘন বদলিঃ ঘন ঘন বদলি অনেক সময় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। একজন বিদ্যুৎ কর্মীর জন্য বিদ্যুৎ লাইন চেনা বা তার এরিয়া সম্পর্কে ধারনা থাকা সবচেয়ে বেশি জরুরী। একজন লাইনম্যান বা বিদ্যুৎ কর্মীর যে কোনো অফিসের (বিশেষ করে পল্লী বিদ্যুৎ এর) আওতাধীন এলাকা এবং বিদ্যুৎ লাইন সম্পূর্ণ ভালোভাবে জানতে ও চিনতে) প্রায় ০৮ মাস থেকে ১৪ মাস সময় লাগে।

এর পর সে ওই অফিসে ভালোভাবে সকল কাজ ভালোভাবে এবং প্রডাক্টিভিটির সাথে করতে পারে। এজন্য ঘন ঘন বদলির ফলে নতুন নতুন অফিসে গিয়ে লাইন চেনার আগেই লাইনে কাজ করতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

১১. যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাবঃ যথাযথ প্রশিক্ষনের অভাবে সঠিকভাবে কাজ করার প্রক্রিয়া না জানা থাকায় কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন ভুল হতে পারে ফলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

১২.পর্যাপ্ত নিরাপত্তা মিটি বা কারিগরী সেমিনারের অভাবঃ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা মিটি বা কারিগরী সেমিনারের অভাবে বিদ্যুৎ কর্মী তার কাজের পূর্বে,কাজ করার সময় ও কাজের পরে পালনীয় নিরাপত্তা বিধি সম্পর্কে অবগত থাকে না ফলে নিরাপত্তা সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকায় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

১৩. যোগাযোগের অভাব বা সম্বনয়হীনতাঃ কাজের সময় যোগাযোগ এর অভাবে বা ভুল বোঝা বুঝির কারণে বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

১৪. কারিগরি ত্রুটিঃ কারিগরি ত্রুটির কারনে বা সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ কারনে কোনো সমস্যা হলেও বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে । এতে অবশ্য বিদ্যুৎ কর্মীর কোনো দোষ থাকে না। নিম্নমানের মালামাল ও কারিগরি ত্রুটিজনিত বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

১৫. বিদ্যুৎ কর্মীর অজ্ঞতাঃ অনেক সময় বিদ্যুৎ কর্মীর অজ্ঞতা বা কাজ সম্পর্কে না জেনে হুটহাট কাজ শুরু করে দেওয়ার করনে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ ১২-১২-২০২৪ইং তারিখে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতে দুইজন লাইনম্যান বিদ্যুৎ লাইনের সেকশন এর ফিউজ খুলে কাজ করতে যায়,কিন্ত ঐ সেকশনের সোর্স থেকে অন্য তারের মাধ্যমে সরাসরি লোডের লাইনে সংযোগ দেওয়া ছিলো বা জাম্পার করা ছিলো।

অর্থাৎ ফিউজ খুলে রাখালেও লাইন চালু থেকে যায়।পরবর্তীতে তারা কাজ করতে গিয়ে অস্থায়ী গ্রাউন্ডিং না করেই কাজ কাজ শুরু করে দেয় ফলে দুইজন লাইনম্যানই দুর্ঘটনার শিকার হন এবং দুইজনই মৃত্যু বরণ করেন। নিচে দূর্ঘটনার কিছু ছবি দেওয়া হলোঃ

দুর্ঘটনার ঘটনা প্রবাহ চিত্র

১৬.নিম্নমানের মালামাল বা সরঞ্জামঃ নিম্নমানের মালামালের কারণে কারিগরি ত্রুটি জনিত দূর্ঘটনা ঘটতে পারে এছাড়াও  লাইনম্যান পোলে আরোহন করার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সমগ্রী যেমন বডি বেল্ট,সেফটি বেল্ট, ক্লাইম্বার সেট, রড, বুট জুতা, হ্যান্ড গ্লভস,মই ইত্যাদি যদি নিম্নমানের হয় তাহলে এগুলোর ত্রুটিজনিত কারণে লাইনম্যান বা বিদ্যুৎ কর্মী পোল থেকে পড়ে গিয়ে দূর্ঘটনার শিকার হতে পারে।

১৭.উর্ধবতন কতৃপক্ষের তদারকির অভাব বা অদক্ষতাঃ উর্ধবতন কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে কর্মী ভুল পথে পরিচালিত হতে পারে ফলে দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে।

১৮.অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারঃ অনেক সময় কিছু খারপ মানুষেরা জাতীয় সম্পদ বিদ্যুৎ চুরি করে অবৈধভাবে ব্যবহার করে বা করার চেষ্টা করে এবং এসময় তারা কিছু নিম্নমানের অনিরাপদ ক্যাবল বা তার ব্যবহার করে। ফলে এগুলো থেকে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

১৯.বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনার বিষয়ে অজ্ঞতা অসাবধানতা উদাসীনতা ও সমন্বয়হীনতাঃ বৈদ্যুতিক কাজে নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনার বিষয়ে অজ্ঞতা অসাবধানতা উদাসীনতা ও সমন্বয়হীনতার কারনে মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

২০.প্রাকৃতিক দুর্যোগঃ প্রাকৃতিক দূর্যোগ যেমন- ঝড়, বজ্রপাত, ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী, টর্নেডো, হারিকেন, জলোচ্ছ্বাস,বন্যা, নদীতীর ভাঙন, উপকূলীয় ভাঙন,ভূমিধ্বস, মৃত্তিকা ক্ষয়, অগ্নিকান্ড,ভূমিকম্প এবং অগ্ন্যুৎপাত ইত্যাদির কারনে মারত্মক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

২১.পুরাতন বা জরাজীর্ণ লাইন যথাযথ ভাবে লাইন পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণ না করাঃ পুরাতন জরাজীর্ণ লাইন যথাযথ ভাবে লাইন পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারনে সেসব লাইনে কাজ করতে গেলে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

২২.নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি না করে কাজ আরম্ভ করাঃ বিদ্যুৎ এর কাজ করার সময় কাজের স্থানকে কাজের উপযুক্ত ভাবে বা নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি না করে কাজ আরম্ভ করার কারণে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

২৩.লাইন সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান না থাকাঃ বিদ্যুৎ লাইনে কাজ করতে হলে অবশ্যই বিদ্যুৎ লাইন সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে এবং লাইন সম্পূর্ণ সোর্স থেকে লোড পর্যন্ত চিনতে এবং জানতে হবে অন্যথা দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

২৪.অযাচিত ডিস ও ইন্টারনেটের লাইন ও ডিভাইসঃ বর্তমানে দেখা যায় বৈদ্যুতিক পোলে জালের মতো ডিস লাইন ও ইন্টারনেটের লাইন ও তাদের বিভিন্ন ডিভাইস লাগানো ও ঝুলানো থাকে। এবং অনেক সময় এই ডিভাইস গুলোর বডি বিদ্যুতায়িত হয়ে থাকে যা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ।এর কারণেও অনেক সময় মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটে।

বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনার : কারণ ও প্রতিকার
বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনার এড়াতে সতর্ক হউন।

বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার প্রতিকার

বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার প্রতিকার করতে উপরে উল্লেখকৃত ও আলোচনাকৃত বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনার কারণসমূহ গুলো সম্পর্কে জানতে হবে এবং এগুলোর কারনে যেন কোনো দুর্ঘটনা না হয় তার জন্য সর্বদা সচেতন থাকতে হবে । এবং এগুলো নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে । নিচে বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার প্রতিকার এর আরো কিছু বিষয় পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলোঃ

বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার প্রতিকারে বিদ্যুৎ কর্মী বা লাইম্যানদের জনগণের করণীয়

১.  পরিকল্পনা প্রণয়নপূর্বক সার্ভিস অর্ডার প্রদান, বিদ্যুৎ কর্মীদের নিরাপত্তামূলক বিষয়ে প্রতিনিয়ত চর্চা করা  এবং কার্যক্ষেত্রে  নিয়ম মেনে চলতে হবে। “আগে নিরাপত্তা পরে কাজ” এই স্লোগানকে সামনে রেখে সব সময় কাজ করতে হবে।

২.  নিয়মতান্ত্রিকভাবে ও নিরাপত্তার সাথে সাট-ডাউন গ্রহণ এবং প্রদান করতে হবে। সাটডাউন প্রদানের পর অবশ্যই তা রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং সাটডাউনকৃত লাইনে বা এসিয়ারে রেড ট্যাগ ব্যবহার করতে হবে এবং সোর্স ও লোড সাইডের বাইপাস ব্লেড কেটে সাটডাউন প্রদান করতে হবে।

৩.  ফিাজিং টেস্ট/ভোল্টেজ টেস্টার দ্বারা বিদ্যুৎ বন্ধ হয়েছে কি না সে বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে।

৪.  অবশ্যই যে স্থানে বা পোলে বিদ্যুৎ এর কাজ করা হবে তার সোর্স ও লোড সাইডের লাইনে গ্রাউন্ডিং সেট ব্যবহার করে অস্থায়ী গ্রাউন্ডিং নিশ্চিত করতে হবে।

৫.  সাইড কানেকশন বা অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন, একাধিক বা ডুয়েল সোর্স এবং জেনারেটর/বিকল্প সোর্স/অন্য উপকেন্দ্র বা অন্য কোনো পবিস এর সোর্স লাইন ইত্যাদি আছে কি-না তা পরিদর্শন করে নিশ্চিত করতে হবে।

৬. অতিরিক্ত আত্ববিশ্বাস ও কাজের সময় ভূল শর্ট-কাট পদ্ধতি পরিহার করতে হবে।

৭.  বিদ্যুৎ লাইনে থাকা ট্রান্সফরমার বা সেকশনের ফিউজ খুলে লাইন বন্ধ করে কাজ করার সময় অবশ্যই ফিউজ কাট-আউটের ব্যারেল অথবা নেকেট ফিউজ ঝুলিয়ে না রেখে নিচে নামিয়ে নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে। এবং পোলে রেডট্যাগ ঝুলিয়ে রাখতে হব ও সংশ্লিষ্ট অফিসে বা অভিযোগ কেন্দ্রে জানিয়ে রাখতে হবে যেন অন্য কেউ এসে তা চালু করে না দেয়।

৮.  এসিআর/ওসিআর/ব্যাকার ট্রিপ করলে বা অটোমেটিক বন্ধ হয়ে গেলে অবশ্যই লাইন পরিদর্শনপূর্বক ত্রুটি নিশ্চিত হয়ে ত্রুটিমুক্ত করে লাইন চালু করতে হবে।

৯.  সঠিক ভাবে রাইট অফ-ওয়ে করতে হবে এবং সাধারণ জনগণকে নির্ধারীত দূরত্ব মেনে ঘরবাড়ি তৈরি করার পরামর্শ দিতে হবে ।

১০. যথাযথ ভাবে লাইন পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। ফিডার ও ইকুইপমেন্ট এর ওভার লোড নিরসন করতে হবে।

১১. সম্ভব হলে ফিউজ কাট আউটের নেকেট ফিউজ সম্পূর্ণ পরিহার করতে হবে এবং শতভাগ ফিউজ কাট আউটে ব্যারেল নিশ্চিত করতে হবে।

বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার প্রতিকারে সাধারণ জনগণের জন্য করণীয়

১.  খালি পায়ে ও ভেজা হাতে বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট কাজ করা যাবে না। বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট কাজ করার পূর্বে অবশ্যই রাবার বা স্পঞ্জ এর জুতা/স্যান্ডেল পড়তে হবে এবং টেস্টার দ্বারা বিদ্যুৎ আছে কি-না তা পরীক্ষা করে নিতে হবে।

২.  বাচ্চাদের থেকে বৈদ্যুতিক সরঞ্চামাদি অথবা বিভিন্ন বিদ্যুৎ পয়েন্ট নিরাপদ দূরত্বে রাখুন। অপ্রয়োজনীয় পয়েন্ট গুলো কসটেপ দিয়ে বন্ধ রাখুন।

৩.  আপনার আশে পাশে বিদ্যুৎ এর ছেড়া তার পড়ে থাকতে দেখলে  কখনো খালি হাতে ধরা যাবে না। অবশ্যই শুকনা কাঠ/বাঁশ/ইনসুলেটেড যন্ত্রপাতি (প্লায়ার) দ্বারা চলাচলের পথ থেকে সরিয়ে রাখতে হবে এবং দ্রুত নিকটস্থ বিদ্যুৎ অফিসে খরব দিতে হবে এবং সম্ভব হলে ফায়ার সার্ভিসেও ফোন দেওয়া যেতে পারে।

৪.  গাছের ডাল/বাঁশ/ঘুড়ি বা অন্যান্য জিনিস বিদ্যুৎ লাইনে লেগে থাকলে তা বিদ্যুৎ চালু অস্থায় কাটা বা সরানো যাবে না। অবশ্যই বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করে বিদ্যুৎ বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তারপর কাজ করতে হবে।

৫. পুকুরে বা জলাশয়ে বিদ্যুৎ এর তার ছিড়ে পড়লে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ না করা পর্যন্ত কোন অবস্থায় পানিতে নামা বা ছেড়া তা খালি হাত দিয়ে ধরা যাবে না।

৬. বিদ্যুৎ এর তারের উপর বা কাছাকাছি কাপড় শুকতে দেওয়া যাবে না। টানা তারে গরু বা ছাগল বাধা যাবে না এবং কোন কারণে টানা তার ধরে টানাটানি করা যাবে না।

৭. বিদ্যুৎ লাইন থেকে নিরাপদ দূরত্বে ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে হবে এবং বিদ্যুৎ লাইনের আশে পাশে গাছপালা লাগানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

৮.  ঘরে বা ফ্লাটে বা বিল্ডিং-এ বা লাইনে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হলে বা আগুন লাগলে প্রথমেই মেইন সুইচ বন্ধ করুন এবং বিদ্যুৎ লাইনে হলে বিদ্যুৎ এর ফিডার বা লাইন বন্ধ করতে বিদ্যুৎ অফিসে দ্রুত ফোন করতে হবে। অর্থাৎ বিদ্যুৎ এর সোর্স প্রথমেই বন্ধ করতে হবে।

শেষ কথা

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা একটি মারাত্মক সমস্যা,যা প্রতিনিয়ত প্রাণহানি ও স্থায়ী পঙ্গুত্বের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষ করে পল্লী বিদ্যুৎ, পিডিবি, ডেসকো, নেসকোসহ অন্যান্য বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার লাইনম্যান ও কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কাজ করছেন।

এই দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস,ভুল সাটডাউন, নিরাপত্তা বিধি উপেক্ষা, অতিরিক্ত কাজের চাপ, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাব, নিম্নমানের সরঞ্জাম, তদারকির অভাব এবং একাধিক বা ডুয়েল সোর্স সংযোগের জটিলতা। এসব কারণ প্রতিরোধে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিদ্যুৎ কর্মীদের যথাযথ নিরাপত্তা বিধি অনুসরণ করতে হবে, প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং আধুনিক নিরাপত্তা সরঞ্জামের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে, যেন তাদের অসাবধানতার কারণে বিদ্যুৎ কর্মীদের ঝুঁকিতে না ফেলতে হয়।

সরকার, বিদ্যুৎ সংস্থা এবং সাধারণ জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বিদ্যুৎ কর্মীদের জীবন রক্ষা করা সম্ভব। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং সঠিক নিয়ম মেনে কাজ করাই বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার একমাত্র উপায়। ” আগে নিরাপত্তা,পরে কাজ “ — এই মূলনীতিকে অনুসরণ করলেই বিদ্যুৎ খাতের কর্মীদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব।

বিদ্যুৎ সম্পর্কে বিস্তারিত আরো কিছু জানতে নিয়মিত ফলো করুন আমাদের Bidyutseva.com ওয়েবসাইট , ইউটিউব চ্যানেল

বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা : কারণ ও প্রতিকার Electricity Crisis

ELECTRICTY CRISIS এবং ফেসবুক পেইজ Electricity Crisis

1 thought on “বিদ্যুৎ কর্মীদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা : কারণ, প্রতিকার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা”

Leave a Comment